কাপাসিয়ায় উৎসব ও লোকউৎসব
অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটন :
বাংলাদেশের অধিকাংশ উৎসব এবং লোক উৎসব কাপাসিয়ায় পালিত হয়ে থাকে। কাপাসিয়ায় প্রচলিত লোকায়িত উৎসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বৈশাখী মেলা। পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু করে পুরো বৈশাখ মাস জুড়েই এ মেলার আয়োজন হয়ে থাকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। বিশেষতঃ কাপাসিয়া বাজার, তরগাঁও, রাউৎকোনা, চাঁদপুর (চানপুর), রাওনাট, আড়াল, চালা বাজার, বারিষাব বাজার, সিঙ্গুয়া বাজার, আড়ালিয়া, গিয়াসপুর, আমরাইদ, টোক, কপালেশ্বর, রায়েদ, সিংহস্ত্রী, ত্রিমোহনী, পানবরাইদ কালি বাড়ি, ঘিঘাট, নাশেরা বটতলার মেলাসহ উপজেলার সকল হাট-বাজার এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে প্রতি বছরই মেলা হয়ে থাকে। বৈশাখী মেলাকে কেউ কেউ বৈশাখের মেলা, বৈশাখি মেলা বা বাংলা নববর্ষের মেলা বলে থাকেন। এর আরো অনেক নাম আছে স্থানীয়ভাবে। কাপাসিয়ার হাটে, বাজারে এবং নানান স্থানে দোকানপাটে ব্যবসায়ীরা বাংলা নববর্ষে হালখাতা অনুষ্ঠান করে থাকেন। বাংলা নববর্ষে গ্রামের প্রতিটি ঘরেই তিতা খওয়ার ধুম পড়ে। কোথাও কোথাও পান্তা-ইলিশ খাওয়ার আয়োজন হয়ে থাকে। গ্রামের কৃষক পরিবারগুলি পহেলা বৈশাখে নানা ধরণের ভর্তাসহ একটু ভালো খাবারের ব্যবস্থা করে থাকে। বৈশাখী মেলায় শিশু-নারী-পুরুষের ভীড় জমে। মেলায় বিভিন্ন ধরণের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি হয়। অনেকেই বৈশাখী মেলা থেকে এ সকল জিনিস কিনে থাকেন। জিলেপি বৈশাথের অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
চৈত্র মাসে কাপাসিয়ায় কোথাও কোথাও চৈতালী মেলা বা চৈত্র সংক্রান্তি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বই মেলা, বই উৎসব, পিঠা উৎসব সহ বিভিন্ন প্রকৃতির উৎসব ও লোকউৎসব আয়োজন হয়ে থাকে এই অঞ্চলে। আশঙ্কার কথা এই যে, কাপাসিয়ার কোনো কোনো এলাকায় বড় মাপের উৎসব বা লোকোৎসব চলার সময় জুয়া, হাউজি, মদ, গাঁজা সহ নানা ধরণের অশ্লীলতা ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলতে দেখা যায়। যা বাঙ্গালির হাজার বছরের এ সংস্কৃতিকে ম্লান করে দিচ্ছে। এ বিষয়ে সবারই সোচ্ছার হওয়া উচিত।
পারিবারিকভাবে পৌষ ও নবান্ন উৎসব পালন করা কাপাসিয়ার দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য। নতুন ধান উঠা উপলক্ষে কৃষকের ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব পালিত হয়। পৌষ ও নবান্নোৎসবে বিভিন্ন রকমের মিস্টান্ন পিঠাসহ মুখরোচক খাবার রান্না করার ধুম পড়ে। ঢেঁকি, ছিয়াইট, গাইলের সাহায্যে চালের গুড়ি তৈরি করা হয়। এসময় প্রায় বাড়িতেই ঢেঁকি, ছিয়াইট, গাইলের শব্দ পাওয়া যায়। বর্তমানে গুড়ি তৈরিতে এসবের ব্যবহার কমে গেছে। চালের গুড়ি দিয়ে খেজুরের রস, আইড্ডা কলা (বিচি কলা), নারিকেল, গুড়, দুধ মিশিয়ে চুই পিঠাসহ নানা জাতের পিঠা তৈরি করা হয়। পৌষ মাসে চালের গুড়া দিয়ে খেজুরের পিঠা, নারকেল পিঠা, ভাঁপা পিঠা, কলা পিঠা, দুধরাজ পিঠা, তেলের পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠা, মালপোয়া, ঢুফি পিঠা, মেরা পিঠা সহ খৈ-মুড়ি দিয়ে মোয়া বানানো হয়।
বলা হয়ে থাকে, পিঠার এলাকা কাপাসিয়া। এখানে হরেক রকম পিঠার বাহারি উপস্থাপন ও আধিক্য দেখা যায়। মিষ্টি, ঝাল, টকসহ বিভিন্ন স্বাদের পিঠা এই অঞ্চলে তৈরি করতে দেখা যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ভেজিটেবল ঝাল পিঠা, ছাঁচ পিঠা, ছিটকা পিঠা, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, চাঁদ পাকন পিঠা, ছিট পিঠা, সুন্দরী পাকন, সরভাজা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, পোয়া পিঠা, পানতোয়া, পুডিং, মালপোয়া, মেরা পিঠা, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, আন্দশা, কুলশি, কাটা পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসফুল পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, নারকেল জেলাফি, তেজপাতা পিঠা, সন্দেশ পিঠা, ফুল ঝুরি পিঠা, ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, সেমাই পিঠা, চিড়ার মোয়া, কাউনের মোয়া, ঝাল মোয়া, ফিরনি, সেমাই, নারকেল নাড়ু, কালাই পুড়ি, সরল পিঠা প্রভৃতি। বাড়িতে মেহমান এলে নতুন ধানের পিঠা দ্বারা আপ্যায়ন করার রেওয়াজ রয়েছে। নবান্ন উৎসবে ‘নাইয়র’- যাওয়ার প্রথা অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে উপজেলার বাঘুয়া, কুশদী, সালদৈ, শ্যামপুর, নাশেরা, রাওনাট সহ অনেক গ্রামে এখনো নাইয়র যাবার রেওয়াজ বা রসম লক্ষ্য করা যায়।
মেঘমাগা বা মেঘমাঘন কাপাসিয়ার একটি লোক ঐতিহ্য। আজকাল মেঘমাগা তেমন দেখা যায় না। অনাবৃষ্টি ও খরা (খড়া) দেখা দিলে গ্রামের বয়স্ক, যুবক, কিশোর, শিশুরা কৃষকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে গায়ে কাদা মেখে উঠানে উঠানে একসাথে, “আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দেরে তুই আল্লাহ মেঘ দে”- বলে গান গেয়ে মাতম করতো। সিঙ্গা, ভাঙ্গা কুলা, ভাঙ্গা হাড়ি-পাতিল, ঢোল, ঝুড়ি, মুখোশ, বস্তা ইত্যদি নিয়ে সন্ধ্যা থেকে রাত ২/৩টা পর্যন্ত সামান্য পানি নিয়ে কাদা করে মেঘের জন্য প্রার্থনা করতো। এই প্রার্থনাকে স্থানীয়ভাবে মেঘমাগা বা মেঘমাঘন বলা হয়। মেঘমাগার সময় তাদের উপর পানি ঢেলে দেওয়া হতো। মেঘের গান গাওয়ার পর তাদের চাল, ডাল, লবন, পেঁয়াজ ও নানা উপকরণ সরবরাহ করা হতো। পরে মেঘমাগার দল এসব রান্না করে খেয়ে আনন্দ পেতো। সেই মেঘমাগার পরিবর্তে সমপ্রতি এই অঞ্চলে ব্যাঙের বিয়ে নামে একটি আচার শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড গরম আর রোদের খরতাপে অতিষ্ট জনজীবনে কাঙ্খিত বৃষ্টির আশায় আয়োজন করা হয় ব্যাঙের বিয়ে। দিনভর নেচে গেয়ে আনন্দ ফূর্তি করে নানান আঞ্চলিক গানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করে ব্যাঙের বিয়ের এই আয়োজন। কেউ কেউ এই আচারকে কুসংস্কার মনে করেন এবং তা বর্জন করে চলেন।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলো ঈদ। দেশের অন্যান্য এলাকার মতোই কাপাসিয়ার মুসলিম সম্প্রদায় এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে ঈদুল ফিতর (ঈদ-উল-ফিতর) পালন করে। এখানকার লোক সমাজে পুরো রমজান মাসেই প্রতিদিন ইফতারের সময় বিভিন্ন ইফতার সামগ্রী নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন হয়ে থাকে। প্রতিটি পরিবারেই ইফতারের সময় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। পূর্বে গ্রামের বাজার থেকে ফেরা হাটুরেদের ইফতার করানোর জন্য ধর্মপ্রাণ মানুষ মুড়ি, শরবত, পানি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতো। অপরকে ইফতার করিয়ে নিজেরা স্বর্গীয় আনন্দ অনুভব করতো। রাতে সেহরির সময় মানুষকে ‘চোঙ্গা’ ফুঁকিয়ে কিংবা বেল বাজিয়ে মুসল্লিদের সেহরির সময় হয়েছে বলে বলে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলা হতো। বর্তমানে কাপাসিয়া অঞ্চলে এদৃশ্য চোখে পড়ে না। আজকাল মসজিদের মাইক থেকে হুইসেল বাজিয়ে কিংবা মাইক দিয়ে মানুষকে ডেকে সেহরির সময়ের খবর জানানো হয়। রোজার (রোযা) শেষে ঈদ উৎসবে মেতে উঠে সবাই।
ঈদুল ফিতরের প্রায় আড়াই মাস পর কুরবানীর ঈদ বা ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। কাপাসিয়া উপজেলার বেশির ভাগ মুসলিম কুরবানী দিয়ে থাকে। তাছাড়া মুসলিম সমাজে ঈদে মিলাদুন্নবী, মোহররম (মহররম/মহরম/মুহররম), আশুরা, শবে মেরাজ (লাইলাতুল মেরাজ), শবে বরাত(লাইলাতুল বরাত), শবে কদর (লাইলাতুল কদর) উপলক্ষে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে। তাছাড়া মুসলিম সমাজে জন্মদিন, আকিকা, খৎনা (সুন্নতে খতনা/খাৎনা), বিবাহ উপলক্ষেও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একসময় এলাকার হাজম(স্থানীয় ভাষায় গুণীল)- তারাই ছেলেদের খাৎনা করতো। বর্তমানে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা খৎনা করা হচ্ছে। এর ফলে হাজমদের প্রভাব কমে গেছে এবং তাঁদের পেশারও পরিবর্তন ঘটেছে। গ্রাম এলাকায় খৎনাকে মুসলমানি বলে অভিহিত করা হয়। এ পর্যন্ত কাপাসিয়া অঞ্চলে কোনো নারী খৎনা হয়নি।
কাপাসিয়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা শারদীয় দূর্গোৎসব অত্যন্ত জাকজমকপূর্ণভাবে পালন করে থাকে। শারদীয় দূর্গোৎসব হলো তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। তাছাড়া দুর্গাপূজা, সরস্বতী পূজা, কালীপূজা বা শ্যামাপূজা, চড়ক পূজা, কুমারী পূজা, ঘরের পূজা, মন্দিরের পূজা সহ বিভিন্ন পূঁজা বা পূজা, রথযাত্রা, দোলযাত্রা, শিবরাত্রি, দোলপূর্ণিমা, গণেশ চতুর্থী, অন্ন প্রাসন্ন, জন্মাষ্টমী, চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবও পালিত হয় কাপাসিয়ায়। পূঁজায় বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে। অন্য ধর্মের লোকজনও এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বারো মাসে তের পার্বন পালন করে থাকে। বিবাহ, জন্ম, মুখেভাত উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন সময় কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এসব কীর্তন কয়েকদিন পর্যন্ত হয়ে থাকে।
অষ্টমী স্নান হিন্দুদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। ব্রহ্মার কৃপা চেয়ে জগতের যাবতীয় সঙ্কীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরণ থেকে মুক্তির বাসনায় দূর্গাপুর ইউনিয়নের রাণীগঞ্জ বাজারের পূর্ব পার্শ্বে ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমী স্নান করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। অষ্টমী স্নানের দিনে হাজারো পুণ্যার্থীর পদচারণায় মুখরিত থাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই তীর্থস্থানটি। যা ঘিঘাট অষ্টমী স্থান হিসেবে সুখ্যাত। অষ্টমী স্নানকে কেন্দ্র করে ঘিঘাট বটতলায় বিশাল মেলা বসে।কাপাসিয়া (গাজীপুর), মনোহরদী(নরসিংদী) ও শিবপুর(নরসিংদী) তিন উপজেলার মোহনায় অবস্থিত বটতলার মেলায় বসে দেব-দেবীর মূর্তি, পুতুল, বাঁশের বাঁশিওয়ালা, ফেরিওয়ালা, নানান ধরনের খেলনা, মাটির তৈরি হাঁড়ি, থালা, বদনার দোকানসহ হরেক রকমের দোকানপাট। বিশেষ করে কাঠের তৈরি আসবাবপত্রের জন্য মেলাটি প্রসিদ্ধ।
বাংলাপিডিয়া তথ্য অনুযায়ী কাপাসিয়া উপজেলায় হিন্দু-মুসলিম পাশাপাশি বসবাস করে অল্প সংখ্যক বৌদ্ধও। এ উপজেলায় সাঁওতাল, কোচ (রাজবংশী), মান্দি প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। এছাড়া কাপাসিয়া, তরগাঁও, ঘিঘাট, ফুলবাড়িয়া, পাবুর, সূর্য্যনরায়পুর, খিরাটি, আমরাইদ, টোকসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষুদ্র পরিসরে মুচি সম্প্রদায়ের লোকেরা বসবাস করে থাকে। তাদেরও রয়েছে কিছু নিজস্ব উৎসব। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তারা উৎসবগুলো ধুমধামভাবে পালন করতে পারে না। একসময় তাদের বাহারি অনুষ্ঠানে এলাকা সরগরম হয়ে থাকতো। কালের বিবর্তনে হালে কাপাসিয়ায় অনেক আদিবাসী বা নৃ-তাত্ত্বিক হিন্দু পরিচয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে দেখা যায়।
কাপাসিয়ার পাড়া-মহল্লায় মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়, বিশেষ করে শীতকালে ওয়াজ মাহফিল আয়োজন হয়ে থাকে। এখানকার সমাজ ব্যবস্থায় উরস শরীফের আমেজও লক্ষণীয়। এক এক মাজার বা দর্গার আদর্শ কিছুটা আলাদা বুঝাতে গিয়ে ‘উরস’ শব্দটাও বিভিন্ন বানান বনে গেছে। ওরছ, ওরস, ওরশ, উরস, উরশ সহ আরো কিছু বানান ও ব্যবহার প্রচলন আছে।
কাপাসিয়ার বিবাহ অনুষ্ঠানে কতিপয় লোকাচার পালিত হয়। যেমন-বিবাহের পূর্বে পানচিনি, গায়ে হলুদ, মেহেদীতোলা, বরণ ডালা, হলুদ রং মাখামাখি ইত্যাদি। বিবাহকালিন সময়ে বরবরণ,পালকী বা গাড়ী সাজানো, বরযাত্রা এবং বিবাহের পরে বধুবরণ, বাসরঘর সাজানো, বৌ-ভাত উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বর্তমানে বিবাহে পালকির প্রচলন নেই বললেই চলে।