Showing posts with label প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব. Show all posts
Showing posts with label প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব. Show all posts

Monday, May 2, 2016

গাজীপুরের প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব স্বভাব কবি গোবিন্দচন্দ্র দাস এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

গোবিন্দচন্দ্র দাস(১৮৫৫-১৯১৮) – 
তাঁর জন্ম, জয়দেবপুর, ভাওয়াল-গাজীপুর,৪ মাঘ ১২৬১ (জানুয়ারি ১৮৫৫)এক দরিদ্র কায়স্থ পরিবারে জন্ম । পাঁচ বছর বয়সে তাঁর পিতা রামনাথ দাসের পরলোক গমন করেন ।
ভাওয়াল–রাজ কালীনারায়ণ রায়ের অন্নে ও অনুগ্রহে লালিত-পালিত ও শিক্ষা প্রাপ্ত হন তিনি । জয়দেবপুর মাইনর স্কুল থকে ছাত্রবৃত্তি পাস করে ঢাকা মেডিকেল স্কুলে ভর্তি । শব ব্যবচ্ছেদের  ভয়ে চিকিৎসাবিদ্যালয় পরিত্যাগ করেন । ভাওয়ালের কুমার রাজেন্দ্রনারায়ণ রায়ের প্রাইভেট সেক্রেটারি নিযুক্ত । জনৈক প্রজাপীড়ক কর্মচারীকে ভাওয়াল-রাজ কর্তৃক কঠোর দন্ড প্রদান না করার প্রতিবাদে চাকরি ত্যাগ(১৮৭৭) করেন । কাজের সন্ধানে ময়মনসিংহ আগমন করেন। সুসঙ্গ -দুর্গাপুরের জমিদার মহারাজ কমলকৃষ্ণ সিংহের খাজাঞ্চি পদে নিযুক্ত লাভ(১৮৭৯) করেন । পরের বছর মুক্তগাছার জমিদার মহারাজ কেশবচন্দ্র আচার্য চৌধুরীর কার্যকারক নিযুক্ত(১৮৮০)  হন । ১৮৮২ সালে ময়মনসিংহ প্রবেশিকা বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় পণ্ডিতের পদে যোগদান । স্কুলটি উঠে গেলে ময়মনসিংহ সাহিত্য সমিতির ধ্যক্ষ নিযুক্ত হন । ১৮৮৪-তে শেরপুরে ‘চারুবার্তা’  পত্রিকার কার্যাধ্যক্ষের পদ গ্রহন করেন । ১৮৮৬-তে শেরপুরের জমিদার হরচন্দ্র রায়চৌধুরী কর্তৃক তাঁর জমিদারির কৃষি  বিভাগের ইন্সপেক্টর নিযুক্ত হন । ১৮৮৮-তে হরচন্দ্রের প্রাইভেট সেক্রেটারি  পদে যোগদান ।কলকাতার সাপ্তাহিক ‘নবযুগ’ পত্রিকায় ভাওয়ালের রাজা রাজেন্দ্রনারায়াণ রায় (কালীনারায়ণ রায়ের  মৃত্যুর পর উনি ই রাজা হন) ও রাজমন্ত্রী সুপ্রসিদ্ধ সাহিত্যিক কালীপ্রসন্ন ঘোষের অনেক অপ্রীতিকর প্রসঙ্গের অবতারণা করে এক প্রবন্ধ গোবিন্দচন্দ্রের রচিত বলে কালীপ্রসন্ন ঘোষ রাজার কর্ণগোচর করেন । গোবিন্দচন্দ্রের বক্তব্য অনুসারে কথিত প্রবন্ধটির লেখক  তিনি নন,অন্য কেউ । কালীপ্রসন্ন ঘোষের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে রাজা তাঁকে জয়দেবপুর থেকে নির্বাসন দেন (ফেব্রুয়ারি-মার্চ ১৮৯২) গোবিন্দচন্দ্র জয়দেবপুর ত্যাগ করে কর্মস্থল শেরপুর চলে যান । তিনি ‘মগের মুল্লুক’ (১৮৯২) নামে একখানি বঙ্গকাব্য রচনা করে তাঁকে তাঁর জন্মভুমি জয়দেবপুর থেকে অন্যায়ভাবে বিতাড়িত করার প্রতিশোধ নেন । ভাওয়াল রাজ্যের প্রজামণ্ডলীর উপর রাজার অমানুষিক পৈশাচিক কাহিনী এতে অগ্নিময়ী ভাষায় উপস্থাপিত । প্রথমা পত্নী সারদাসুন্দুরীর মৃত্যুর প্রায় সাত বছর পর বিক্রমপুরের ব্রাহ্মণগ্রামে শ্বশুরালয়ে গৃহ নির্মাণ করে তথায় বাস । ১৮৯৫-এ কলকাতায় নব্য ভারত প্রেসের কার্যাধ্যক্ষের পদ অংকৃত । ১৮৯৬-এ মুক্তগাছার জমিদার মহারাজ সুর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী কাশহাটি কাছারীর নায়েব নিযুক্ত । ১৮৯৮-এ বেগুনবাড়িকাছারীতে বদলি । ১৯০২-এ কর্মত্যাগ । আজীবন দরিদ্রাবস্থায় দিন যাপন । জীবনে ১০/১২ টি চাকরীতে নিয়োজিত ছিলেন । অব্যবস্থিত চিত্ততার জন্য কোন চাকরিই দীর্ঘকাল করতে পারেননি । স্বীয় ত্রুটির জন্য অনেকবার কর্মচ্যুত হয়েছেন । স্বভাব কবি হিসেবে খ্যাত । নারীভক্তি, পতি-পত্নীর প্রেম, ভ্রাতৃস্নেহ, সন্তানবাৎসল্য, বন্ধুপ্রীতি, গার্হস্থ্য জীবনের সুখ-দুখের কাহিনী, পল্লীজিবনের আলেখ্য, জাতীয় উদ্দিপনা ও স্বদেশপ্রেম তাঁর কবিতায় নিরাভরণ ভাষায় চিত্রিত । কবিতাগ্রন্থঃ প্রেম ও ফুল(১৮৮৭), কুস্কুম(১৮৯১), মগের মুল্লুক(১৮৯২), কস্তরী(১৮৯৫), চন্দন(১৮৯৬), ফুলরেণু(১৮৯৬), বৈজয়ন্তী(১৯০৫), শোক ও সান্ত্বনা(১৯০৯)
১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় মিটফোর্ট হাসপাতালে বিনা চিকিতসায় নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । 



তথ্যসূত্রঃ বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা -গাজীপুর 
পূর্ববর্তী পোষ্টঃ 

গাজীপুরের বনভূমি ও গাছপালা || বাংলাদেশ